আমরা হয়তবা অনেকেই বিভিন্ন কাপড় এর দোকান বা বড় বড় ফ্যাশন হাউস গুলোতে গেলেই, বিভিন্ন প্রকারের বিভিন্ন ডিজাইনের বিভিন্ন ভঙ্গিতে এই ফ্যাশন ডামি বা ডল গুলো দেখে থাকি। কি অদ্ভুত এক শিল্প! কোনটা বা সাদা কোনটা বা কালো অদ্ভুত ভঙ্গিতে প্রতিটি ডামি গুলো ফ্যাশন হাউস গুলোতে সাজানো থাকে। মানুষ কে আকৃষ্ট করার কেমন জানো এক অশরীরী ক্ষমতা লুকিয়ে থাকে এই ডামি গুলোর ভিতর। কিন্তু আমরা কি কখন আমাদের অবচেতন মনে চিন্তা করেছি? কেনো এই ডামি গুলো ব্যবহার করা হয় বা এই ডামি ব্যবহার এর ইতিহাস কি?

ফ্যাশন ডামির ব্যবহার এবং এর ইতিহাস :
ফ্যাশন হাউস গুলোতে ডামি গুলো সাধারনত ব্যবহার করা হয়ে থাকে তাদের লেটেস্ট ডিজাইন এর পোশাক গুলো কাস্টমার এর মাঝে উপস্থাপন করার জন্য। এতে করে কাস্টমাররা মোটামুটি একটি ধারনা পায় পোশাকটি কেমন এবং পরিধান করলে তাদের কে কেমন লাগবে।
এই ফ্যাশন ডামি গুলোর ব্যবহার শুরু হয় উনিশ শতাব্দীর দিকে তখন রাস্তার পাশে অবস্থিত বড় বড় ফ্যাশন হাউস গুলো গ্লাস এর ভিতর এই ডামি গুলো ডিসপ্লে করে রাখতো রাস্তা দিয়ে হাটা চলা করা পথচারীদের আকৃষ্ট করার জন্য। তখনকার সময় ফ্যাশন ডামি গুলো এতো জীবন্ত ছিলনা। পরবর্তীতে ১৯২০ সালে ফ্রান্স এর ডল নির্মাতা Pierre Imam। Elaine, Roberta and Nadine নামে তিনটি মোম এর তৈরি ফ্যাশন ডামি বাজারে আনে। যা দেখতে কিছুটা জীবন্ত এবং মানুষের অবয়ব এর মতোই ছিলো। ডামি শিল্পে পরিবর্তন আসে বিশ শতকের মাঝামাঝি সময় তখন কার তৈরি মেয়ে ডামি গুলো দেখতে আরো আকর্ষনীয় ছিলো অনেকটাই মানুষ এর অবয়ব এর মতো ছিলো। এখন কার তৈরি আধুনিক ডামি গুলো দেখতে আরো রিয়ালিস্টিক এবং প্রযুক্তি সংযুক্ত করার মাধ্যমে ডামি গুলোতে নতুন নতুন ফিচার যোগ করা হয়েছে যেমন- কাস্টমারকে ওয়েলকাম জানানো, হাত পা মাথা মুভ করা ইত্যাদি ইত্যাদি।

ফ্যাশন ডামির প্রকারভেদ:
ক্লাইন্ট এর চাহিদা মতো বিভিন্ন প্রকারের ডামি তৈরি করে থাকে নির্মাতারা। সাধারনত যেসব ডামি আমরা দেখে থাকি। ৫-৬ ফিট উচ্চতার মেয়ে ডামি এবং ৬-৭ ফিট উচ্চতার ছেলে ডামি ও বাচ্চা ডামি। ইউরোপে তো মোটা মানুষ এর কথা চিন্তা করে তাদের অবয়বে ও ডামি তৈরি করা হচ্ছে।
একটি পোশাক তৈরি করে কাস্টমার এর কাছে প্রেজেন্ট করাটাও অনেকটা বড় চ্যালেঞ্জ এবং এই কাজটি সহজ করে দিচ্ছে এই ফ্যাশন ডামি। তাই ফ্যাশন শিল্পে এই প্রাণহীন ডামি গুলোর অবদান নিছক কম নয়।
Writer: Mahamudul Hasan Munna BUFT Research Assistant, Bunon