ছত্রাক বা মাশরুম থেকে কি ফাইবার তৈরি সম্ভব? হুম সম্ভব। সম্পূর্ণ বায়োডিগ্রেডবল এবং সাসটেইনেবেল ফাইবার মাশরুম থেকে পাওয়া সম্ভব। এটি মূলত এক ধরনের জৈব ফাইবার যা তৈরি হয় মাশরুম স্পোর এবং মাশরুম তন্তু থেকে। বিশ্বব্যাপী জৈব টেক্সটাইল এর চাহিদা বেশি থাকায় এ ফাইবারের বাজার চাহিদাও অত্যন্ত সম্ভাবনাময়।
ছত্রাক থেকে ফ্যাব্রিক তৈরির প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়াটি বায়োফেব্রিকেশন নামে পরিচিত। এ প্রক্রিয়াটি মূলত ছত্রাক কিংবা ব্যাকটেরিয়ার মতো ক্ষুদ্র প্রাণী অনুজীবের ক্রমবর্ধমান অংশ থেকে ফ্যাব্রিক তৈরির প্রক্রিয়া। তবে এক্ষেত্রে মজার ব্যাপার হলো এ প্রক্রিয়াটি দেখিয়েছে ফ্যাশন এবং জীববিজ্ঞানের সম্পর্ক৷ কিভাবে ফ্যাশন জীববিজ্ঞানের কাছাকাছি নিয়ে আসে। মুসকিন হলো এমনি একটি ফ্যাব্রিক যা পশুর চামড়া সোয়েতের সম্ভাব্য বিকল্প এবং ইতোমধ্যেই ব্যাগ এবং জুতা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে। ডাচ ফ্যাশন ডিজাইনার অ্যালিলা হাইটিংক মাইকোএফ এক্স নামে একটি ফ্যাব্রিকের শোস্টোপার পোশাক তৈরি করেছিলেন। যা মাশরুমের মূল থেকে তৈরি।তিনি পুষ্টির সরবরাহ এবং মাশরুমের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য পেট্রি থালা ব্যবহার করেছিলেন। এ থেকে প্রাপ্ত ডিস্কগুলি একটি পাতলা ফ্যাব্রিক গঠনের জন্য ওভারল্যাপিং করা হয় যা একটি পুতির উপর পোশাক হিসেবে রূপান্তরিত হয়। এই ফ্যাব্রিকের সুবিধা হল পোশাকটি সেলাই ছাড়াই একসাথে পাওয়া যায়। অর্থাৎ এ ধরনের ফ্যাব্রিকের সেলাই প্রয়োজন হয় না। যা প্রোডাকশন টাইম এবং খরচ অনেকটা কমিয়ে দিতে পারে।
মাইসেলিয়াম গাছের লতাপাতা এবং কৃষি বর্জ্য সমন্বিত উপযুক্ত পরিবেশে বংশবৃদ্ধির মাধ্যমে এবং উপযুক্ত প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে একটি ফিনিসড ফ্যাব্রিকে রূপান্তরিত হয়। প্রক্রিয়াটি ফেরেন্টিংয়ের অনুরূপ এবং ডিজাইনররা বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকের কাপড় তৈরিতে গ্রিন টি, চিনি, খামির এবং ব্যাকটেরিয়া জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করেছেন।
মাইসেলিয়াম থেকে তৈরি ফ্যাব্রিক অ বিষাক্ত, জলরোধী এবং অগ্নি প্রতিরোধী। যেহেতু শুধুমাত্র মূলটি কাপড় তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ফলে এতে স্পোরের অভাব থাকে যা একদিকে ভালো। এ ফাইবারের তৈরি কাপড় কাগজের মত পাতলা, নমনীয় এবং পরিধানে স্বাচ্ছন্দ্যময়। এ ফাইবারের উপাদান অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল এবং সংবেদনশীল ত্বকের জন্য উপযুক্ত। এটি যেহেতু জৈব ফাইবার তাই পরিবেশের জন্য উপযোগী, তাছাড়া উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কোন বিষাক্ত রাসায়নিক বা সার ব্যবহৃত হয় না। এছাড়াও খুব কম জল ব্যবহৃত হয় উৎপাদন প্রক্রিয়ায় যা পানি সাশ্রয় করে। উল্লেখ্য মাইকোএক্স এক্স পোশাক তৈরির জন্য হুইটিংক ১২ লিটার পানি ব্যবহার করেছিলেন যেখানে তুলার টি শার্ট তৈরিতে ২৫০০ লিটার পানি দরকার। বায়োডিগ্রেডেবল বৈশিষ্ট্য নিশ্চিত থাকায় কোন দূষণ ছাড়াই ব্যবহারের পর এ ফাইবারগুলো পরিবেশে ফিরে আসে।

টেন্ডার ছত্রাক প্রায় সব অংশই ফ্যাব্রিক তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। এর উপাদান অসাধারণ ইনসোল তৈরি করে যা অত্যন্ত শোষণকারী তন্তু জুতোর প্রচুর পরিমাণে আদ্রতা শোষণ করতে পারে।এ ধরনের ফ্যাব্রিক অ্যাথলেটদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। তাছাড়া ঘড়ির স্ট্র্যাপ হিসেবে এর তন্তুগুলো একজিমা আক্রান্ত ব্যক্তিদের ত্বকের জ্বালা রোধ করতে পারে। মাশরুমের চামড়া জৈব, আঠালো এবং রাসায়নিক যুক্ত মার্বেল এবং মখমল পৃষ্ঠ রয়েছে।যা অত্যন্ত কার্যকর শোষণকারী,অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, এন্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত এবং ভাল ডাই অ্যাবিলিটি সম্পন্ন।

মাশরুম ফাইবার অসাধারণ সাসটেইনেবল এবং পরিবেশবান্ধব ফাইবার। এমনকি অনেক ধরনের ফাইবারের বিকল্প হতে পারে এ জৈব ফাইবার। উৎপাদন খরচ এবং কম শক্তি প্রয়োজন হওয়ায় এ ফাইবারের বাজার চাহিদা থাকবেই। ভবিষ্যত ফ্যাশনের জন্য টেকসই, পরিবেশবান্ধব,পুর্নব্যবহারযোগ্য ফাইবারের খোঁজ করতে হলে মাশরুম ফাইবারের কথা আসবেই। Backward linkage এর চাহিদা চমৎকার ভাবে পূরণ করা সম্ভব যদি বাণিজ্যিক ভাবে সূদরপ্রসারী পরিকল্পনার মাধ্যমে এ ফাইবার উৎপাদন করা যায়। তবে আশানুরূপ ফল পেতে হলে যথাযথ পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন প্রয়োজন যা উৎপাদন খরচকে অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারে।
Writer : Sahriar Hossain Himel SARSTEC Research Assistant, BUNON
Appreciate it for this post, I am a big big fan of this internet site would like to keep updated.
Keep working ,remarkable job!