বাংলাদেশে টেক্সটাইল শিল্পের ক্রমেই দ্রুত বিকাশ ঘটে চলেছে এবং বিশ্বমানের টেক্সটাইল শিল্পের কাতারে বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্প ইতোমধ্যেই নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে। দেশের জাতীয় অর্থনীতির মেরুদন্ড হচ্ছে বস্ত্রশিল্প আর যেহেতু এটা এক বিশাল ও বহুমাত্রিক সেক্টর, এই শিল্পের জন্য প্রয়োজন দক্ষ প্রযুক্তিজ্ঞান সমৃদ্ধ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের যাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে “Made In Bangladesh ” ট্যাগ।
আর, এতসব বাস্তবিক সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে, টেক্সটাইলে উচ্চশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও প্রক্রিয়া,তাৎপর্যতা ইত্যাদি নিয়ে হাসান মেহেদী এর সাথে ফেইসবুকে লাইভ সাক্ষাৎকার নেয় “বুনন” পরিবার। তিনি বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে বসবাস করছেন। এছাড়াও উনি বর্তমানে আয়ারল্যান্ডের কর্ক ইউনিভার্সিটিতে প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্টের উপর এম.বি.এ করছেন। উল্লেখ্য যে, বুননের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে লাইভ প্রোগ্রামটি উপস্থাপনা করেন, বুনন পরিবারের চিফ-কোর্ডিনেটর ওয়েজ আহমাদ রিপন। আমাদের পাঠকদের জন্য বুননের সাথে হাসান মেহেদী এরnসাক্ষাৎকারের কিছু বিশেষ মূহুর্তগুলো তুলে ধরা হলো।
বুনন: আজকে আমাদের লাইভ সাক্ষাৎকারের বিশেষ অতিথি হিসেবে এসেছেন হাসান মেহেদী ভাই। উনি বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে বসবাস করছেন। এছাড়াও উনি বর্তমানে কর্ক ইউনিভার্সিটিতে প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্টের উপর এম.বি.এ করছেন। আমরা আজকে উনার কাছে আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে জানবো এবং আপনাদের কোনো প্রশ্ন থাকলে আপনারা করতে পারবেন। মেহেদী ভাই, কেমন আছেন আপনি?
হাসান মেহেদী: প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই বুননকে এবং যারা লাইভ প্রোগ্রামটি দেখছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালোই আছি।
বুননঃ বাংলাদেশের একজন শিক্ষার্থী হয়ে আয়ারল্যান্ডে পড়াশোনা করার জন্য গেলেন, এর পেছনের গল্প অথবা মোটিভেশনটা কি ছিলো এবং এতো দেশ থাকতে আপনি আয়ারল্যান্ডে কেনো গেলেন? -সেবিষয়ে যদি কিছু বলতেন?
হাসান মেহেদী: আসলে আমার ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিলো উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার,জীবনে বড় কিছু একটা করার। আসলে,আমরা যখন উচ্চশিক্ষার জন্য বাইরের কোনো দেশে পড়তে যাই,আমাদের সেই দেশের ভাষা জানতে হয়। কিন্তুু নতুন একটা ভাষা শেখা সবার কাছে সহজ না। আয়ারল্যান্ডের অফিসিয়াল ভাষা হচ্ছে ইংরেজি। ইংরেজি পারতাম, তো নতুন করে কোনো ভাষা শেখার দরকার ছিলো না। আর, আমার পাশের এলাকার একজন সিনিয়র ছিলেন যিনি আয়ারল্যান্ডে বসবাস করতেন। উনি বললেন যে আয়ারল্যান্ডে টিউশন ফি কম,নতুনকরে কোনো ভাষা শিখতে হবে না, পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট-টাইম জব করা যাবে এবং গ্রাজুয়েশন শেষে আয়ারল্যান্ডের স্থায়ীভাবে বাসিন্দা হওয়া যাবে। তো, এসব চিন্তা করেই আমি আয়ারল্যান্ডে আসি।
বুননঃ যতদুর আমরা জানি যে, বাংলাদেশে আয়ারল্যান্ডের দূতাবাস পর্যন্ত নেই আয়ারল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশের একটা কূটনৈতিক দূরত্ব আছে। এতসব বাঁধা পেরিয়ে আপনি আয়ারল্যান্ডে গিয়েছেন, সেখানকার সম্ভাবনা ও সংস্কৃতি নিয়ে যদি কিছু বলতেন?
হাসান মেহেদী: আচ্ছা, একেক দেশের সংস্কৃতি একেক রকম। এখানে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ থাকে যাদের অধিকাংশই খ্রিষ্টান এবং হিন্দু, মুসলিমরা সংখ্যাটা একটু কম, আর এখনকার সংস্কৃতিটা লন্ডনের মতই অনেকটা। বাংলাদেশের সাথে অনেক দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন ভালো না হওয়ায়, অনেক ভালো শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার জন্য বাইরের দেশগুলোতে যেতে পারে না। আপাতত,উন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তানের শিক্ষার্থীরাও স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে আসছে, সাধারন সুযোগ সুবিধা গুলোও পাচ্ছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা শুধু সরকারি স্কলারশিপগুলো নিয়ে এখানে আসতে পারে, তাদের জন্য বাকি স্কলারশিপ ও সুযোগসুবিধার সম্ভাবনাগুলো আয়ারল্যান্ড সরকার থেকে ক্রমান্বয়ে বাড়বে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
বুননঃ ধন্যবাদ আপনাকে। যারা গর্ভমেন্ট স্কলারশিপ পাবে না, তাদের তো নিজস্ব অর্থায়নে পড়তে হবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীর জন্য কেমন সুযোগ সুবিধা আছে? -এবিষয়ে যদি কিছু বলতেন?
হাসান মেহেদী: কোনো শিক্ষার্থী ব্যাচেলার বা মাস্টার্স বা পিএইচডি, যেটাই করতে আয়ারল্যান্ডে আসুক না কেনো, তাকে ভালো IELTS স্কোর নিয়ে আসতে হবে, যেহেতু এটা একটা” ইংলিশ -স্পিকিং কান্ট্রি “। আয়ারল্যান্ডে আসার প্রথম ধাপটা শুরু হবে সঠিক কাগজপত্র জমা দেওয়ার পরিকল্পনা মাথাই রেখে, সার্টিফিকেট,ন্যাশনাল আইডি, পাসপোর্ট সবজায়গায় নাম, ঠিকানাসহ বাকি সকল জীবনবৃত্তান্ত পুরাপুরি একই থাকতে হবে। এরপর দ্বাদশ শ্রেণি উওীর্ন হলে একাডেমিক কাগজপএগুলো এডুকেশন বোর্ড ও ফরেন-মিনিস্ট্রি থেকে সত্যায়িত করে তার বৈধতা প্রমানপূর্বক পরের ধাপের কথা চিন্তা করতে হবে। এরপর, একজন শিক্ষার্থী সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে পারবে আর ব্যাচেলরের জন্য কেউ যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়েছে, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রফেসর এর কাছ থেকে দুইটি রিকমেন্ডেশন-লেটার নিয়ে প্রেপার জমা দিবে। কারও যদি পড়াশোনার পাশাপাশি কোনো কোর্স বা পার্ট-টাইম জব করার অভিজ্ঞতা থাকে অথবা সহ-শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ততা থাকে, তবে সেক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী কিছু বাড়তি সুযোগ সুবিধা পাবে। এভাবে সব কাগজপত্র একসাথে সঠিকভাবে সংগ্রহ করে সেগুলোর বৈধতা নিশ্চিতকরনের পরে একজন শিক্ষার্থী আয়ারল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরাসরি এবং সহজেই আবেদন করতে পারে।
বুনন: ধন্যবাদ আপনাকে। টেক্সটাইলের শিক্ষার্থীরা যদি আয়ারল্যান্ডে এম.বি.এ. অথবা মাস্টার্স করতে চায়, সেক্ষেত্রে তাদের জন্য কেমন সুযোগ সুবিধা রয়েছে?
হাসান মেহেদী: আচ্ছা, যারা টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ছেন, তাদের বিষয়টার অনেক ধাপ আছে, বহুমাত্রিক ডিপার্টমেন্ট আছে। এখানে পড়তে আসতে হলে অনেক ভালো রেজাল্ট নিয়ে আসতে হবে। এখানে মূলত সুযোগসুবিধা পায় যারা সাইন্স নিয়ে পড়াশোনা করেন এবং এরপর যারা বিজনেস ব্যাকগ্রাউন্ডে পড়াশোনা করে থাকে। একজন শিক্ষার্থী যদি বাংলাদেশ থেকে পড়তে আসে, তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে বাৎসরিক পাঁচ-সাড়ে পাঁচ হাজার থেকে বএিশ-তেএিশ হাজার ইউরো পযন্ত টিউশিন ফি দিতে হয় এবং এটা শিক্ষার্থীকে নিজে থেকে দিতে হয়। কিন্তুু কোনো শিক্ষার্থী নিজেকে ভালোভাবে প্রস্তুুত করে নিয়ে আসলে টিউশন ফি থেকে শুরু করে যাবতীয় খরচ নিজেই যোগান দিতে পারবে।
বুনন: ধন্যবাদ আপনাকে। অনুষ্ঠানের এপর্যায়ে আপনার কাছে জানতে চাইবো,যারা আয়ারল্যান্ডে পড়তে যেতে চায়,তাদের জন্য ভিসা প্রসেসিং নিয়ে যদি কিছু বলতেন। যেহেতু, আমরা জানি যে বাংলাদেশে আয়ারল্যান্ডের কোনো দূতাবাস নেই,সেক্ষেত্রে কি করা প্রয়োজন?
হাসান মেহেদী: আচ্ছা। আপনি যখন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এডমিশন লেটার পেয়ে যাবেন, তখন আপনি নিজেকে সার্বিকভাবে প্রস্তুুত করবেন। কেননা, আবেদনকারীকে এ্যাম্বাসিতে ভাইভা দিতে হয় এবং সেখানে যোগ্যতার প্রমান দিতে পারলেই কেবল ভিসা পাওয়া যাবে।আপনাকে এ্যাম্বাসিতে আট থেকে দশ মিনিটের একটি প্রশ্ন-উওর পর্বের সম্মুখীন হতে হবে, যেখানে আপনাকে সবকিছু নিয়ে প্রশ্ন করা হবে। এক্ষেএে,একজন শিক্ষার্থীকে অবশ্যই আবেদনের জন্য ব্যবহৃত সকল কাগজপএের একটি মূলকপি ও দুইটি ফটোকপি নিয়ে যেতে হবে এবং আয়ারল্যান্ডে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাচ্ছে সেটার টিউশিন ফি পরিশোধ করতে হবে। কোনো শিক্ষার্থী যদি এ্যাম্বাসিতে গিয়ে টিউশন ফি এর স্লিপ না দেখাতে পারে, তাহলে তার ভিসা বাতিল করা হবে। সেক্ষেত্রে, কারও ভিসা বাতিল হলে পনের দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে এবং আবেদন করে এপয়েনমেন্ট নেওয়ার দুই থেকে তিনদিন আগেই আপনাকে ভারত,মালয়েশিয়া বা নেপালে যাওয়া লাগবে, কারন বাংলাদেশে আয়ারল্যান্ডের কোনো এ্যাম্বাসি নাই এবং এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে দেখা করার পর এক-দেড়মাস অপেক্ষা করতে হতে পারে ভারতে। এরপর সব কাগজপত্র, টিউশিন ফি স্লিপ,আয়ারল্যান্ড কোথাই উঠবে সেটার চুক্তিপএ নিয়ে তারপর একজন শিক্ষার্থী আয়ারল্যান্ডে আসতে পারে।
বুনন: জ্বি, ধন্যবাদ। কেউ যদি আয়ারল্যান্ডে যেতে চায়, সে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন এবং এডমিশন কিভাবে নিবে? -এসম্পর্কে যদি কিছু বলতেন?
হাসান মেহেদী: আচ্ছা, এক্ষেত্রে, একজন শিক্ষার্থী কোন বিষয়ে পড়তে চায়, কেমন টিউশিন ফি তার জন্য বহন করা সম্ভব, কোথাই কেমন সুযোগ -সুবিধা দেওয়া হয় সব কিছু খোঁজ নিয়ে তারপর সে অনুযায়ী সব বিকল্পগুলোর মধ্যে তাকে তার জন্য উপযুক্ত বিকল্পটা খুঁজে নিতে হবে। এরপর সেই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইটে গিয়ে সব বিষয়ে খোঁজ নিবে এবং কোনো বিষয় নিয়ে কোনো দ্বিধা থাকলে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে বা উক্ত কোর্সের প্রফেসরের সাথে যোগাযোগ করতে পারবে এবং এতে একজন শিক্ষার্থী নির্ভেজালভাবে আবেদনও করতে পারে। আর,কোনো শিক্ষার্থী যখন আয়ারল্যান্ডে পড়তে আসবে, তখন তাকে কোনো বিষয়ে পরিপূর্ণ দক্ষতা এবং সেই বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষার জটিলধাপ মোকাবেলার সক্ষমতা ও স্বদিচ্ছা থাকতে হবে। আমাদের বাংলাদেশের পড়াশোনার সাথে এখানকার পড়াশোনার অনেক তফাৎ আছে। তো,যে বিষয়ে কোনো শিক্ষার্থীর পড়ার সক্ষমতা ও স্বদিচ্ছা থাকবে, সেই বিষয় ও বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ভালোভাবে সব তথ্য নিয়ে সে আয়ারল্যান্ডে পড়তে আসবে।
বুনন: জ্বি ধন্যবাদ। একজন শিক্ষার্থী যদি আয়ারল্যান্ডে পড়তে যায়, সেক্ষেত্রে তার সিজিপিএ কেমন ভূমিকা পালন করে?
হাসান মেহেদী: আচ্ছা। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে নির্ভর করে, তবে বাংলাদেশে কোনো শিক্ষার্থীর যে সিজিপিএ থাকে সেটা এখানকার ইসিটিএস বা ইউরোপিয়ান ক্রেডিট ট্রান্সফার সিস্টেম এ কমে আসে। তো, সিজিপিএ অবশ্যই ভালো রাখতে হবে। তাহলে অনেকে বলতে পারে , যাদের সিজিপিএ কম, তারা কি আবেদন করতে পারবে না?অবশ্যই পারবে। কোথাও কোথাও কম সিজিপিএতেও আবেদন করা যায়। সেক্ষেত্রে, একজন শিক্ষার্থীকে সজাগ থেকে খোঁজখবর নিতে হবে।
বুননঃ ধন্যবাদ আপনাকে। বাংলাদেশের কোনো শিক্ষার্থী যদি আয়ারল্যান্ডের সরকারি স্কলারশিপ পেতে চায়,তাহলে তার সিজিপিএ কেমন থাকা লাগবে, কি কি শর্ত পূরন করতে হবে – সে-সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন?
হাসান মেহেদী: বাংলাদেশের জন্য আয়ারল্যান্ডের যে গভমেন্ট স্কলারশিপ আছে, কোনো শিক্ষার্থী যদি সেটা পেতে চায়, তাহলে সে বাংলাদেশে গ্রাজুয়েশন শেষে কোথায় ও কতবছর চাকুরী করেছে, সেই কোম্পানির গুলোর রিকমেন্ডেশন লেটার, যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন করেছে সেখানকার রিকমেন্ডেশন লেটার নিয়ে আবেদন করতে পারবে এবং সেক্ষেত্রে সিজিপিএ ৩.৫ বা তার উপরে থাকতে হবে।
বুননঃ কোনো শিক্ষার্থীর আবেদনের ক্ষেত্রে, IELTS স্কোর কেমন থাকতে হয়?
হাসান মেহেদী: আচ্ছা, যারা ব্যাচেলর করতে আসবেন তাদের IELTS স্কোর কমপক্ষে ৪.৫ এর উপর রাখতে হবে।
বুনন: ধন্যবাদ। দর্শকদের মধ্যে একজন জানতে চেয়েছেন, টেক্সটাইলের কোনো শিক্ষার্থী আইটি সম্পৃক্ত কোনো বিষয় নিয়ে পড়তে পারবেন কি না?
হাসান মেহেদী: আচ্ছা, যদি কেউ বিষয় পরিবর্তন করতে চায়, সে অবশ্যই বিষয় পরিবর্তন করতে পারবে। তবে, এক্ষেত্রে, তাকে মোটিভেশন লেটারে উল্লেখ করতে হবে যে সে কেনো বিষয় পরিবর্তন করতে চান?তাহলে বলা যায় যে, টেক্সটাইল ব্যাকগ্রাউন্ডের একজন শিক্ষার্থী মোটিভেশান লেটারে উপযুক্ত কারন দর্শানোর প্রেক্ষিতে বিষয় পরিবর্তন করে আইটি সম্পৃক্ত বিষয় নিয়ে পড়তে পারবেন।
বুনন: একজন শিক্ষার্থী যখন ভিসা প্রসেসিং করে যখন আয়ারল্যান্ডে পৌঁছে যাবে, তারপর তার থাকা খাওয়াসহ ব্যবস্থার সুযোগসুবিধা কেমন?
হাসান মেহেদী: এক্ষেত্রে আমি বলবো যে বিশ্ববিদ্যালয় কোনো শিক্ষার্থীকে যে জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করে দিবে, সেটা সবচেয়ে ভালো থাকার ব্যবস্থাপনা হবে তার জন্য । তবে, এখানে থাকাখাওয়ার ব্যবস্থাপনার সুযোগ সুবিধা কম। তবে থাকাখাওয়া বাবদ খরচ আস্তে আস্তে কমতে থাকবে।
বুনন: কোনো শিক্ষার্থী যদি নিজস্ব অর্থায়নে দুইবছরের মাস্টার্স প্রোগ্রামে যায়, তাহলে তার কেমন অর্থ খরচ হতে পারে এবং সেটা কি পার্ট-টাইম জব করে যোগান দেওয়া সম্ভব কিনা?
হাসান মেহেদী: আচ্ছা। এক্ষেত্রে বলবো, এখানে যখন কোনো শিক্ষার্থী পড়তে আসে প্রথমেই তাকে একবছরের টিউশন ফি এর টাকাটা জমা দিতে হয়,আর দ্বিতীয় বছরের টাকাটা সে পার্ট-টাইম জব করেই যোগান করে ফেলতে পারবে যদি সে সমর্থ হয়।
বুননঃ ধন্যবাদ আপনাকে। এক্ষেত্রে, প্রতিবছরে পড়াশোনা করতে কি পরিমান অর্থের প্রয়োজন হয়ে থাকে? -এসম্পর্কে যদি কিছু বলতেন?
হাসান মেহেদী: এক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে একবছরের টিউশন ফি গড়ে সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার ইউরো, অথবা বাংলাদেশি টাকার হিসেবে সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা লেগে যেতে পারে।
বুনন: এইযে প্রতিবছর সাড়ে পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার ইউরো টিউশন ফি এবং থাকাখাওয়ার খরচ লাগে, কোনো শিক্ষার্থী কি আয়ারল্যান্ডে পার্টটাইম জব করে প্রতিবছর এই পরিমান অর্থের যোগান দিতে পারবে?আর, এক্ষেএে আয়ারল্যান্ড সরকারের কোনো বাধ্যবাধকতা আছে কি না?
হাসান মেহেদী: আচ্ছা, এক্ষেএে একজন শিক্ষার্থী প্রতি সপ্তাহে ২৪ থেকে ২৫ ঘন্টা কাজ করতে পারবেন এবং প্রতি ঘন্টা বাবদ সে পাবে বারো ইউরো এবং একজন শিক্ষার্থী বছরে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ইউরো পার্ট টাইম জব করে বৈধ উপায়ে উপার্জন করতে পারবে।
বুনন: কোনো শিক্ষার্থী মাস্টার্স শেষ করার পর আয়ারল্যান্ডে ফুলটাইম জব করতে পারবে কি না? -এসম্পর্কে যদি কিছু বলতেন?
হাসান মেহেদী: আচ্ছা। এক্ষেত্রে বলবো, একজন শিক্ষার্থী মাস্টার্স পড়ার পাশাপাশিও ভার্সিটির ভেকেশন পিরিয়ডে ফুলটাইম মানে সপ্তাহে চল্লিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ ঘন্টা চাকুরী করতে পারবে এবং দুই বছরের মাস্টার্স কোর্স শেষ করার পর ভিসা-ক্যাটাগরি পরিবর্তন করে সে আয়ারল্যান্ডেই ফুলটাইম জব করতে পারবে।
বুনন: জ্বি ধন্যবাদ আপনাকে। আমরা জানি বাংলাদেশ থেকে যে শিক্ষার্থীরা পড়তে যায়,তাদের ভিসা আয়ারল্যান্ড সরকার বি-ক্যাটাগরিতে রাখে, এবং কেউ যখন চাকুরির জন্য আবেদন করবে তখন তার ভিসা ক্যাটাগরি কি হবে? -এবিষয়ে যদি কিছু বলতেন?
হাসান মেহেদী: আচ্ছা,এক্ষেত্রে কেউ যখন আয়ারল্যান্ডে পড়াশোনা করার জন্য থাকবে সে বি-ক্যাটাগরিতে থাকে এবং কোনো কাজের সাথে যখন যুক্ত হবে বা চাকুরীর জন্য আবেদন করে জব পাবে, তখন সে এ-ক্যাটাগরি পাবে এবং সাথে ইনসুরেন্সসহ অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধাও পেয়ে থাকে।
বুনন: কোনো শিক্ষার্থী মাস্টার্স করে সেখানে চাকুরী করার কতদিন পরে অথবা আয়ারল্যান্ডে কতবছর থাকলে সেখানকার স্থায়ী নাগরিক হতে পারবে?
হাসান মেহেদী: আচ্ছা। কেউ যদি এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা হতে চায়ে, সেক্ষেত্রে তাকে আয়ারল্যান্ডে অন্ততপক্ষে চার বছর বাস করতে হবে এবং ফুলটাইম জবের কন্টাক্ট পেপার দেখিয়ে পারমানেন্ট রেসিডেন্ট এপ্লিকেশন এর জন্য আবেদন করতে হবে।
বুনন: আমরা অনুষ্ঠানের একদম শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। আমাদের দর্শকবৃন্দের কাছে থেকে আমরা বিদায় নিচ্ছি। আপনাদের আজকের লাইভ প্রোগ্রামের পরেও আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষাবিষয়ক কোনো প্রশ্ন থাকলে ইনশাআল্লাহ, ভবিষ্যতে আবারও কোনো লাইভ সাক্ষাৎকারে আমরা হাসান মেহেদী ভাইকে লাইভে নিয়ে আসবো। এছাড়া, আপনারা হাসান মেহেদী ভাইয়র ইউটিউব চ্যানেল “লাইফ অফ মানি” তে আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষাবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়ে যাবেন। অনেক ধন্যবাদ জানাই হাসান মেহেদী ভাইকে, ব্যস্ততার মধ্য থেকে আমাদের সময় দেওয়ার জন্য। আজ এখানেই শেষ করছি। আশা করি সবাই বুননের সাথেই থাকবেন। সবার সুস্থতা কামনা করে আজকে এখানেই বিদায় নিচ্ছি। ধন্যবাদ সবাইকে।
Reporter: Abir Mohammad Sadi BUTEX Sr.Campus Ambassador, BUNON