বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পের ক্রমেই দ্রুত বিকাশ ঘটে চলেছে এবং বিশ্বমানের টেক্সটাইল শিল্পের কাতারে বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্প ইতোমধ্যেই নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে। দেশের জাতীয় অর্থনীতির মেরুদন্ড হচ্ছে বস্ত্রশিল্প আর যেহেতু এটা এক বিশাল ও বহুমাত্রিক সেক্টর, এই শিল্পের জন্য প্রয়োজন দক্ষ প্রযুক্তিজ্ঞান সমৃদ্ধ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের যাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে “Made In Bangladesh ” ট্যাগ।
আর, এতসব বাস্তবিক সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে, টেক্সটাইলে উচ্চশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা, প্রক্রিয়া ও তাৎপর্যতা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করতে রুম্মান সম্রাট এর সাথে ফেইসবুকে লাইভ সাক্ষাৎকার নেয় “বুনন” পরিবার। তিনি বর্তমানে চায়নার উহান্ টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটিতে টেক্সটাইল বিষয়ে মাস্টার্স করছেন। উল্লেখ্য যে, বুননের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে লাইভ প্রোগ্রামটি হোস্টিং করেন, বুনন পরিবারের চিফ-কোর্ডিনেটর ওয়েজ আহমাদ রিপন। আমাদের পাঠকদের জন্য বুননের সাথে রুম্মান সম্রাট এর সাক্ষাৎকারের বিশেষ মূহুর্তগুলো তুলে ধরা হলো।

বুনন : আসসালামু আলাইকুম দর্শকবৃন্দ। দেশ ও দেশের বাইরে থেকে যারা আমাদের সাথে চায়নাতে উচ্চশিক্ষাবিষয়ক আলোচনার লাইভ সাক্ষাৎকারে যুক্ত হয়েছেন, তাদের সবাইকে জানাই প্রীতি ও শুভেচ্ছা। আপনাদের সাথে যুক্ত রয়েছি আমি বুননের চিফ কো-অর্ডিনেটর, ওয়েজ আহমাদ রিপন এবং আমাদের আজকের গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎকারটির অতিথি হিসেবে আমাদের সাথে যুক্ত রয়েছেন রুম্মান সম্রাট, যিনি বর্তমানে চীনের ওহান্ ইউনিভার্সিটিতে টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং -এর উপর মাস্টার্স করছেন। এছাড়াও উনি বুননের একজন গর্বিত সদস্য এবং আমাদের টেক্সটাইল অ্যান্ড গার্মেন্টস মার্চেন্ডাইজিং পেইজের একজন প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য বা ফাউন্ডিং-মেম্বার। রুম্মান সম্রাট ভাইয়াকে ধন্যবাদ আমাদের আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সবার উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলার জন্য।
রুম্মান সম্রাট: আসসালামু আলাইকুম। আপনাদেরও ধন্যবাদ আমাকে সবার উদ্দেশ্যে কথা বলার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। আমি চেষ্টা করবো, যারা চায়নাতে উচ্চশিক্ষার জন্য আসতে চায় তাদের জন্য দিকনির্দেশনামূলক কিছু কথা বলার জন্য।
বুনন: ধন্যবাদ আপনাকে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই আপনার সম্পর্কে জানতে চাইবো এবং করোনাকালীন সময়ে চীনের শিক্ষার্থীদের পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইবো।
রুম্মান সম্রাট: আমি ২০১৫ সালে টেক্সটাইলের উপর বি.এস.সি সম্পূর্ন করেছি সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তারপর তিনবছর চাকুরী করেছি। তখন চিন্তা করতাম এম.এস.সি নিয়ে। আমাদের সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে চীনের উহান্ ইউনিভার্সিটির একটা এম.ও.ইউ বা MOU চুক্তি করা আছে যার ফলে আমাদের চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ সৈয়দ ফখরুল স্যারের অনুপ্রেরণায় আমি চীনের উহান্ ইউনিভার্সিটিতে টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং-এ এম.এস.সি করতে আসি। আর চীনের উহান-এ বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি অনেকটা স্থিতিশীল। এখানকার চাইনিজ শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রম আগের মতই চলছে, ২৯ আগষ্ট থেকে তারা ক্যাম্পাসে আসা শুরু করে এবং ক্লাস করতেছে। বহিঃবিশ্বের শিক্ষার্থীদের জন্য এমন কোনো সিদ্ধান্ত আসে নাই। উহানে বহিঃবিশ্বের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে, তবে বেইজিংয়ে আংশিকভাবে বহিঃবিশ্বের শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে ফেরা শুরু করেছে। তবে উহানে্ ১ মাস পরিস্থিতি দেখা হবে, সংক্রমনের ঘটনা না ঘটলে বহিঃবিশ্বের শিক্ষার্থীরাও উহানে্র বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিরতে পারবে। এলক্ষ্যে আল্লাহ রহমতে যদি চীনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলে হুবেই এডুকেশন মিনিস্ট্রি, হুবেই গর্ভমের্ট এবং যেসকল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বহিঃবিশ্বের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে, তারা একটা মিটিংয়ে বসে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিবে যে কবে বহিঃবিশ্বের শিক্ষার্থীরা চীনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পুনরায় ফিরতে পারবে।

বুনন: ধন্যবাদ আপনাকে। তাহলে যেসকল শিক্ষার্থী চীনা উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চায়, করোনাকালীন এ সময়ে তারা কিভাবে যেতে পারে বা এজন্য কিভাবে নিজেকে প্রস্তুুত করবে?
রুম্মান সম্রাট: করোনাকালীন সময়েও চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য যারা আসতে চায় তাদের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া গত বছরগুলোর মতই ছিল। উচ্চ-শিক্ষার জন্য ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা এইবছরের জানুয়ারি মাস থেকেই চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পেরেছে এবং বিগত বছরগুলোর চেয়ে খুব তফাৎ হয়নি এক্ষেত্রে। হয়ত কিছুদিন পরে তারা উচ্চশিক্ষার জন্য চীনে আসতে পারবে, তবে বাকিসব কিছুই বিগত বছরগুলোর মতই হবে এবং চীন সরকার অনুমোদন দেওয়ামাএ তারা উচ্চশিক্ষার জন্য এখানে আসতে পারবে।
বুনন: ধন্যবাদ আপনাকে। এক্ষেত্রে যারা উচ্চশিক্ষার জন্য চীনে যাবে তাদের কি কি ডকুমেন্টস প্রস্তুুত রাখতে হবে?
রুম্মান সম্রাট: যদি কেউ এম.এস.সি করার জন্য চীনে আসতে চায় তাহলে এস.এস.সি, এইচ.এস.সি, বি.এস.সি এর সার্টিফিকেট ও মার্কশীট, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, একটি রিসার্চ-পেপার বা ‘স্টাডি-প্রোপোজাল’, ব্যাংক-স্টেটমেন্ট ইত্যাদি প্রস্তুুত রাখতে হবে। এসব কাগজপএ ও এর পাশাপাশি আরও কিছু কাগজপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে লাগতে পারে। তবে রিসার্চ পেপারটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ, একজন শিক্ষার্থীকে বুঝিয়ে বলতে হবে ১-২ পৃষ্ঠায় বুঝিয়ে বলতে হবে, চীনে কি নিয়ে এবং কেনো পড়তে চায়।
বুননঃ ধন্যবাদ আপনাকে। টেক্সটাইলের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য চায়নায় কি কি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে?
রুম্মান সম্রাট: এক্ষেত্রে আমি উহান্ টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটির কথা বলবো, যেটার নামের সাথে টেক্সটাইল শব্দটা জড়িত এবং যেটা শুধু টেক্সটাইলের শিক্ষার্থীদের জন্যই, যেমন বাংলাদেশে বুটেক্স আছে, যে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শুধুই টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং পড়ানো হয় শিক্ষার্থীদের।
বুনন: ধন্যবাদ আপনাকে। অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে তাহলে আমরা উহান্ টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটি নিয়ে জানতে চাইবো।
রুম্মান সম্রাট: উহান্ টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটি নিয়ে বলতে হলে আমি আগে উহান্ নিয়ে বলবো।উহান্ হচ্ছে চায়নার শিক্ষা কার্যক্রমের প্রাণকেন্দ্র, কেননা উহানে্ সর্বাধিক স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে এবং যার কারনে এটিকে চায়নার “এডুকেশন-সিটি” বলা হয়। আর উহান্ টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষার্থীরা এখানে ক্যাম্পাসের ভিতরে থেকেই পড়াশোনা করে থাকেন।
বুনন: চীন সরকার কি কি বিষয় এবং প্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে বহিঃবিশ্বের শিক্ষার্থীদের চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য সুযোগ দিয়ে থাকে? -এসম্পর্কে যদি কিছু বলতেন।
রুম্মান সম্রাট: চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জানুয়ারি থেকে শুরু করে মার্চ পর্যন্ত আবেদন প্রক্রিয়া চলতে থাকে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত আবেদন সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে করতে হতো, সেক্ষেত্রে চীনের পরিচিত কারও কাছে একজন শিক্ষার্থী তার ডকুমেন্টস জমা দিয়ে থাকে এবং সে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে আবেদন করে আসে। তবে ২০২০ সালে অনলাইনে আবেদন করার প্রদ্ধতি চলমান রয়েছে। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে এস.এস.সি, এইচ.এস.সি, বি.এস.সি এর মার্কশিট ও সার্টিফিকেট, রিসার্চ -প্রোপোজাল, মিডিয়া অফ ইন্সট্রাকশন্, পূর্বের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত দুইটি রিকমেন্ডেশন লেটার, স্টাডি প্লান ইত্যাদি ডকুমেন্টস নিয়ে কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এরপরে তারা মে-জুন মাসের দিকে উই-চ্যাট গ্রুপে এ্যাড করে দিবে এবং সেখানে ডিপার্টমেন্ট অনুযায়ী ইন্টারভিউ ডেইট দিবে। মূলত ঐ ইন্টারভিউয়ের উপর ভিত্তি করে একজন শিক্ষার্থী স্কলারশিপ পাবে। পাশাপাশি বি.এস.সির সিজিপিএ বা অন্যান্য রেজাল্টও বিবেচনাধীন থাকবে।
বুননঃ এক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থীকে ইন্টারভিউ বোর্ডে ভাইভায় কি কি প্রশ্ন করা হয়ে থাকে?
রুম্মান সম্রাট: তারা মূলত বেসিক প্রশ্নগুলোই করে থাকে। পাশাপাশি, রিসার্চ -পেপার ও স্টাডি প্লান সম্পৃক্ত প্রশ্নও করে থাকে। এছাড়া কিভাবে প্রশ্নের উওর দিচ্ছে এবং কোনো শিক্ষার্থী কিভাবে নিজেকে প্রকাশ করতে পারছে -এগুলোও নিরক্ষণ করে থাকেন তারা।
বুননঃ ধন্যবাদ আপনাকে। এক্ষেত্রে,চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য IELTS স্কোর কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ?
রুম্মান সম্রাট: চীনে IELTS স্কোর কোনো গুরুত্ব বহন করে না। কারণ, তারা ইংরেজি ভাষায় অভ্যস্ত না।ইংরেজি ভাষায় স্বাভাবিক ভাবে কিছু কথা বলতে পারলেই চলে।
বুনন: ধন্যবাদ আপনাকে। চীনে আবেদন করতে কেমন ফি দিতে হয়?
রুম্মান সম্রাট: চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে আবেদন করতে কোনো ফি দিতে হয় না।
বুননঃ ধন্যবাদ আপনাকে। যেসকল শিক্ষার্থী চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চায়, তারা কিভাবে স্কলারশিপ পেতে পারে? -এসম্পর্কে যদি কিছু বলতেন।
রুম্মান সম্রাট: স্কলারশিপটা নির্ভর করে ইন্টারভিউ বোর্ডে একজন শিক্ষার্থীর ভাইভার উপর। কোনো শিক্ষার্থী যদি সফলভাবে ভাইভা দিতে পারে, তবে অবশ্যই সে ভালো স্কলারশিপ পাবে। পাশাপাশি, দেশভেদে কোটা থাকে।
বুনন: যেহেতু উহান্ টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটির কথা বললেন-এখানে কি কি ডিপার্টমেন্ট আছে এবং কারা পড়তে পারে?
রুম্মান সম্রাট: এখানে টেকনিক্যাল রিসার্চ এন্ড ইন্জিনিয়ারিং, ম্যাটেরিয়াল সাইন্স, ইনভাইরনমেন্টাল সাইন্স, টেক্সটাইল সাইন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং, ক্যামিকাল সাইন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং ইত্যাদি বিষয় আছে। এসব ডিপার্টমেন্টে টেক্সটাইলের উপর যারা বি.এস.সি সম্পূর্ণ করে, তারাই পড়তে আসে। পাশাপাশি সম্প্রতি নন-টেক্সটাইলের শিক্ষার্থীদের জন্য ট্রিপল ই, সি.এস.ই, এম.বি.এ ইন একাউন্টিং এ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট , ফ্যাশান-ডিজাইনিং ইত্যাদি ডিপার্টমেন্ট খোলা হয়েছে।
বুনন : ধন্যবাদ আপনাকে। ভাইভার পরবর্তী ধাপটি কি হবে? -এসম্পর্কে যদি কিছু বলতেন।
রুম্মান সম্রাট: এরপর ১ সপ্তাহের মধ্যেই উই-চ্যাট গ্রুপে নোটিশ দিবে কারা কারা সি.এস.সি অথবা ১০০% স্কলারশিপ পাবে আর কারা পি.এস.সি অথবা ৫০% স্কলারশিপ পাবে। যারা ১০০% স্কলারশিপ পাবে,শুধু তাদের আবার গভমেন্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে আগের প্রক্রিয়ায় সব ডকুমেন্টস দিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। তারা কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে ১০০% স্কলারশিপের ব্যাপারটা নিশ্চিত করবে।তবে, এডুকেশন ফি,টিউশন ফি কাউকেই দিতে হবে না। এরপর, আগষ্ট-নভেম্বরের মধ্যে জে.ডব্লিউ ফর্মটা পেয়ে যাবে এবং সেটা পাওয়ার পর তাদের অনুমোদিত বাংলাদেশে যেসকল হাসপাতাল আছে, সেখানে মেডিকেল চ্যাকআপ করাতে হবে। এরপর জে.ডব্লিউ ফর্ম, মেডিক্যাল চ্যাকআপ ফর্ম, এডমিশন লেটার নিয়ে অ্যাম্বাসিতে গিয়ে ভিসা করতে হবে এবং তারপর যে ডেইট দেওয়া হবে অ্যাম্বাসি থেকে, সে-অনুযায়ী চায়নায় প্রবেশের অনুমতি মিলবে।
বুনন: ধন্যবাদ আপনাকে। কোর্স-প্লানগুলোর সময়সীমা ও ক্রেডিট নিয়ে যদি কিছু বলতেন?
রুম্মান সম্রাট: সাধারণ ২ বছর বলা হয়ে থাকে, তবে ২০ মাসের মধ্যেই কোর্স শেষ হয়ে যায়। আর ডিপার্টমেন্ট অনুযায়ী ক্রেডিট হয়ে থাকে।কারও হয়ত ৭৪ কারও হয়ত ৬২, এটা নির্ভর করে ডিপার্টমেন্ট অনুযায়ী।
বুনন: চায়নাতে কোনো শিক্ষার্থী কি পার্ট-টাইম জব করতে পারে কি না?
রুম্মান সম্রাট: চায়নাতে স্বাধারনত শিক্ষার্থীদের পার্ট-টাইম জবের অনুমতি দেওয়া হয় না। তবে, কেউ চাইলে করতে পারে, এক্ষেত্রে নিজেকে খুঁজে নিতে হয় এবং ব্যাপারটা কষ্টসাধ্য।
বুনন: চীনে মাস্টার্স প্রোগ্রাম চায়না ভাষায় পড়ানো হয় কি না? অথবা তাদের ভাষা শেখাটা বাধ্যতামূলক কি?
রুম্মান সম্রাট: না, চীনের মাস্টার্স কোর্সটা ইংরেজি ভাষায় হয়ে থাকে এবং যেহেতু মাস্টার্স এর সময় কম,এখানে চীনা ভাষা শিখতে চাপ দেওয়া হয় না। তবে এইচ.এস.কে -৩ করতে পারে কেউ, এটা তার নিজের জন্যই। ইংরেজি ভাষার জন্য যেমন IELTS করতে হয়, চায়না ভাষা শিখতে তেমনি এইচ.এস.কে-৩ করলে ভালো হবে বহিঃবিশ্বের শিক্ষার্থীদের জন্য।
বুনন: ধন্যবাদ আপনাকে। যারা মাস্টার্স শেষ করে চীনে চাকুরী করতে চায়, তাদের ক্ষেএে কি বলবেন?
রুম্মান সম্রাট: আমি উহান্ টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটির কথাই বলি। এখানে প্রথম বছরে তাত্ত্বিক এবং দ্বিতীয় বছরে প্র্যাকটিকাল করানো হয়।কেউ চাইলে ১ বছরের জায়গায় ৬ মাসের মধ্যেই প্র্যাকটিকাল শেষ করে উহান্ টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটিতে ইন্টারশিপের কথা বলে চাকুরীর আবেদন করতে পারে। তবে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই চাকুরীর জন্য অনুমোদন দেয় না। আর, এক্ষেত্রে যেখানে চাকুরী করতে যাবেন, সেখানে ওয়ার্কিং-ভিসা আছে কিনা? -সেটা অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন। তবে, এক্ষেত্রে চায়নার ভাষা জানা থাকতে হবে অবশ্যই।
বুনন: যারা টেক্সটাইলের বিভিন্ন বিষয়ের উপর রিসার্চ করতে চায়, তাদের সুযোগ সুবিধা কেমন?
রুম্মান সম্রাট: এখানে রিসার্চের প্রচুর সুযোগ সুবিধা আছে। একজন শিক্ষার্থীকে বুঝাতে হবে কেনো সে রিসার্চ করতে চায় এবং সেই রিসার্চ জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে মানবকল্যাণে ভূমিকা রাখতে পারবে। রিসার্চ প্রোপোজাল প্রফেসরের পছন্দ হলে তিনি অর্থও বিনিয়োগ করে থাকে। কারণ, চীনে প্রত্যেকটি প্রফেসরকে শিক্ষার্থীদের রিসার্চের জন্য একটা ফান্ডিং দেওয়া হয়ে থাকে এবং তাকে নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে সেটা শিক্ষার্থীদের রিসার্চের কাজে ব্যয় বা বিনিয়োগ করতে হয় নতুবা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। মূলত, এখানে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা,রিসার্চ, থাকা-খাওয়া সহ সবধরনের সুযোগ সুবিধাই পেয়ে থাকে এবং এখানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আরেকটি সুবিধা হচ্ছে সেশন জোট হয় না।
Md. Rumman Samrat
বুননঃ ধন্যবাদ আপনাকে। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা টেক্সটাইলের শিক্ষার্থীদের জন্য চীনে উচ্চশিক্ষা নিয়ে খুটিনাটি অনেক কিছু জানতে পারলাম।ব্যস্ততার মাঝেও সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আমরা সাক্ষাৎকারের একবারে শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি,আপনি দর্শকদের উদ্দেশ্যে যদি কিছু বলতেন।
রুম্মান সম্রাট: আপনারা যদি উচ্চশিক্ষার জন্য বা রিসার্চ এর জন্য জন্য বাইরে আসতে চান, তবে চায়নায় আসতে পারেন, এখানে থাকাখাওয়া থেকে শুরু করে রিসার্চ বা উচ্চতর শিক্ষার প্রচুর সুযোগ সুবিধা ও সম্ভাবনা আছে,ইনশাআল্লাহ চীন থেকে উচ্চতর শিক্ষা সম্পূর্ণ করে বহিঃবিশ্বে বিচরণের জন্য বিশ্বমানের শিক্ষা নিয়ে যেতে পারবেন।
বুননঃ অনেক ব্যস্ততার মধ্যে ও সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো। দেশ ও দেশের বাইরে থেকে যারা আমাদের লাইভ প্রোগ্রামে এতক্ষণ যুক্ত ছিলেন, তাদের সবার জন্য সুস্থতা ও শুভেচ্ছা কামনা করে আজকের প্রোগ্রামটি এখানেই শেষ করছি।
Reporter: Abir Mohammad Sadi BUTEX Sr.Campus Ambassador, BUNON