২১ শতাব্দীতে এসে আপনি শুধু দেশের চাকুরী করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করবেন এটা মোটেও গ্রহনযোগ্য নয়। নিজেকে এমনভাবে প্রস্তুত করবেন যেনো আমি বিশ্ববাজারে চাকরীর জন্য নিজেকে স্বয়ংসম্পন্ন মনে করেন। গত ২ বছর ও পেন্ডেমিক সময়ে বুনন ও ফ্রেশ টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারদের সাথে মিশে যে বিষয়টা জেনেছি সেটা হলো আপনারা সবাই ইন্সটিটিউটকে দোষারোপ করেন।
তবে এর মধ্যে গত ১২ ডিসেম্বর বিজেএমইএ সাতটি অভিনব প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে শুরু করছে এক যুগান্তকারী অঙ্গিকার, “Go Human, Go Green’। বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের কর্মীদের সমর্থন ও সহায়তা প্রদান, তৈরি পোশাক শিল্প এবং বাংলাদেশের জন্য আর্থসামাজিক ভাবে আরো অগ্রসর ও টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণের লক্ষ্যে বিজেএমইএ-এর এই অঙ্গিকার গ্রহন করে। সরকার ও সংস্থাগুলো পদক্ষেপ নিচ্ছে ধীর গতিতে এই সমস্যাগুলো আমরা ওভারকাম করতে পারবো। ইন্টারনেটের যুগে আপনার এই অভিযোগের কোনো মূল্য নেই। ঘরে বসে আপনি আধুনিক প্রযুক্তি ও স্মার্ট টেক্সটাইল নিয়ে স্টাডি করতে পারেন। কর্পোরেট জগতে ব্যবহার হওয়া বিভিন্ন সফটওয়্যার সম্পর্কে জানতে পারেন। কমিউনিকেশন স্কিলে বাসায় ইন্টারনেটের সহযোগিতা নিয়ে দক্ষ হতে পারেন।
আরেকটি বিষয় আপনারা মাথায় রাখবেন। বাংলা ও ইংরেজি এর পাশাপাশি আপনারা ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে আরেকটি ভাষা শিখবেন এটা হতে পারে জার্মান, চায়নিজ ইত্যাদি এটা কাজে দিবে। দেশে টেক্সটাইল ভালোভাবে প্রতিষ্ঠা হতে আরো সময় লাগতে পারে। এই সময় বসে থাকলে চলবে না। আমার অভিজ্ঞতার আলোকে আমি বলতে পারি এরকম প্রথম জেনারেশন এর টেক্সটাইল বানিয়ে আমরা বেশিদিন টিকে থাকতে পারবো না। পৃথিবী এগিয়ে যাবে আমরা পিছনে পড়বো। আমাদের আধুনিক প্রযুক্তি ও স্মার্ট টেকনোলজি নির্ভর পড়াশুনা করতে হবে ও বিশ্ব চাকরীর বাজারের সাথে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আমাদের কর্মক্ষেত্রকে দিন দিন বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করছে, তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। ভবিষ্যতে এই চ্যালেঞ্জ আরও বাড়বে ছাড়া কমবে না। আমাদের টিকে থাকতে হবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবটিকস, অটোমেশন ইত্যাদির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। বাড়াতে হবে দক্ষতা এবং গ্রহণ করতে হবে যুগোপযোগী বিভিন্ন কৌশল।

ফুলের সুগন্ধে মানুষ ফুলের দিকে আকৃষ্ট হয় ও তাকায়। ফুলকে মানুষের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ঠিক একই ভাবে আপনার কোয়ালিটি থাকলে ও আপনি স্কিলড হলে চাকরী আপনার পিছনে ঘুরবে আপনাকে চাকরির পিছনে ঘুরতে হবে না। এই উপদেশ শুধুমাত্র টেক্সটাইল স্টুডেন্টদের জন্য নয়। টেক্সটাইল স্টুডেন্ট, ফ্রেশার, চাকুরীজীবি সবার উদ্দেশ্য আমার লেখাটি। আপনারা প্রত্যেকে নিজ জায়গা থেকে নিজেদের প্রস্তুত করুন।
এর পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার, BGMEA, BKMEA, ITET, ATET কে কিছু ইমিডিয়েট পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দাবি রাখবো সেটা হলো আপনারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষদের এটার উপর ট্রেনিং দেবার ব্যবস্হা করতে পারেন। বাহিরের দেশ থেকে কিছু স্মার্ট ও টেকনিক্যাল টেক্সটাইল স্পেশালিষ্ট গেষ্ট টিচারের নিয়ে আসার মাধ্যমে। এছাড়া আমি বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন HR দের দৃষ্টি আকর্ষন করবো। আপনারা অনুগ্রহপূর্বক প্রার্থী নিয়োগের সময় সঠিক পদ্ধতিতে করবেন তাহলে যোগ্য মানুষদেরকে আমরা আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে পাবো।
Writer: Mr. Salauddin Head of Adviser, Bunon Chairman, ASK Apparel and Textiles Sourcing.