করোনাকালে যখন বিশ্বের বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানি খরচ মেটাতে হিমশিম খেয়ে কর্মী ছাঁটাই করতে ব্যাস্ত, যখন বি.জে.এম.ই.এ সভাপতি রুবানা হক ঘোষণা দেন ৫০% গার্মেন্টস কর্মী ছাঁটাই করবে সে জায়গায় ব্যাতিক্রম সীকম গ্রুপ ও প্রিমিয়ার সিমেন্টের ব্যাবস্হাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আমীরুল হক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, প্রতিষ্ঠানটি হচ্ছে চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক সীকম গ্রুপ। যাদের প্রিমিয়ার সিমেন্ট, ডেলটা ব্র্যান্ডের তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এল.এন.জি), প্রাকৃতিক গ্যাস (এলপিজি), তেল পরিশোধন, কনটেইনার, ইয়ার্ডসহ বিভিন্ন ব্যাবসা রয়েছে। সবকিছুর নেতৃত্ব দিচ্ছেন যিনি তিনি হচ্ছেন সফল শিল্প উদ্যোক্তা আমীরুল হক!
আমাদের দেশে যেটি খুব বেশি লক্ষ করা যায় যে শ্রমিকদের শোষণ করে মুনাফা অর্জন করতে এবং কারণে অকারণে কর্মী ছাঁটাই করতে। সে জায়গায় ব্যাতিক্রম সীকম গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত প্রায় ৭০০০ হাজার শ্রমিক, কর্মকর্তা সহ সবার ভরণপোষণ,আবাসনের দায়িত্ব নিয়েছে সীকম গ্রুপ। শুধু দায়িত্ব নিয়ে তাঁরা ক্লান্ত হয়নি, প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত শ্রমিক, কর্মচারিদের নিরাপদ রাখতে তারা স্যানিটাইজার, মাস্ক, গ্লাভস,পিপিই সবকিছু সরবরাহ করে যাচ্ছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটিতে থেকে শ্রমিকরা উৎপাদন কার্যক্রমে ভূমিকা রাখতে পারছে।
যদিও করোনার ভয়াবহ থাবায় কাঁচামাল সরবরাহ সহ বিভিন্ন কারণে উৎপাদন কমে গেছে অর্ধেকের ও কম। এ বিষয়ে আমিরুল হককে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ” শ্রমিকদের জন্যই আমরা এত বড় বড় শিল্প কারখানার মালিক, মুনাফা কমবেশি অর্জন করেছি। কিন্তু এই সময়ে কর্মী ছাঁটাই করতে নিজের কাছেও খারাপ লাগে, মনে হয় এত বছর ব্যবসা করে, এক বছরের লোকসান করার ক্ষমতা যদি না থাকে, এ ব্যবসা করার মানে কী?”
আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে কোম্পানির উৎপাদন কমে গেলেও শ্রমিক, কর্মচারীদের সুযোগ, সুবিধা কোন অংশে কমেনি। বরং আবাসন, খাওয়া সহ বিভিন্ন খরচ কোম্পানি বহন করে ও ঠিকমত বেতন পরিশোধে সীকম গ্রুপ কখনো কৃপণতা দেখায়নি। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা সীকম গ্রুপের মোহাম্মদ আমীরুল হক হয়তো কষ্টটা বুঝেন বলেই দুঃসময়ে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করছেন।
এছাড়া করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ৩০০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করার জন্য চট্টগ্রামে অবস্থিত “সিটি হল কনভেনশন সেন্টার ” চট্রগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নিকট হস্তান্তর করছে সীকম গ্রুপ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম সহ প্রয়োজনীয় সাহায্য দিতে প্রস্তুত প্রতিষ্ঠানটি। দেশের চিকিৎসা সেবায় অবদান রাখতে সরকার প্রয়োজনীয় সহায়তা দিলে তাঁরা একটি বিশ্ব মানের হাসপাতাল করতে চায়।
সীকম গ্রুপের মত দেশের অন্যান্য শিল্প পরিবার, শিল্প উদ্যেক্তারা এগিয়ে আসুক এই দুর্দিনে সেই প্রত্যাশা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষের।
Reporter: Mohammad Tayub PCIU Campus Ambassador, Bunon