প্রত্যেকটি দেশের পোশাকের একটি নিজস্ব ইতিহাস রয়েছে। তেমনি বাংলাদেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সমৃদ্ধ পোশাকের মধ্যে অন্যতম গ্রামীণচেক। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে নিজস্ব সনাতন তাঁতে বোনা জ্যামিতিক বর্নিল নকশার ঐতিহ্যগত লুঙ্গি চেকের একটি আধুনিক রূপ হচ্ছে আজকের গ্রামীণচেক।
জ্যামিতিক বর্নীল বুননের এই লুঙ্গি গামছা একসময় নেহায়েত কৃষক অথবা শ্রমিকের পোশাক বলেই গন্য ছিল। সেই সাধারণ লুঙ্গি গামছার বর্ণীল নকশা কালের বিবর্তনে হাজারো চড়াই উৎরাই পেরিয়ে নতুন বর্ণসমতা ও বৈচিত্র্যের ঝুড়ি নিয়ে ফ্যাশন জগতের একটি নতুন নাম গ্রামীণ চেক হিসেবে একটি নিজস্ব স্থান দখল করে নিয়েছে বিশ্বজুড়ে।

নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী গ্রামীণ ব্যাংক এর প্রতিষ্ঠাতা বিশ্ব নন্দিত বাংলাদেশ এর নাগরিক ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস এর হাত ধরেই এই গ্রামীণচেক এর প্রবর্তন।
গ্রামীণ চেকের নকশাবিদ একজন নেদারল্যান্ডস এর নাগরিক জনাবা, Lousmiyn Vander Akker. তিনি UNDP এর হয়ে গ্রামীণ চেক এর নকশা করে থাকেন। “গ্রামীণ চেক” চেক কাপড় হলেও এই চেকের নিজস্ব নকশা বা ডিজাইন রয়েছে। প্রায় ২৫০০ ডিজাইনের চেক তৈরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এসব ডিজাইন নাম্বারিং করা থাকে এবং বায়ার ও নাম্বারিং পদ্ধতিতেই কিনে থাকেন।

গ্রামীণ চেক হস্তচালিত তাঁতে বোনা হয়। তাঁত টি সম্পূর্ণ কাঠের তৈরি। জনসাধারণের চাহিদা, রুচি ইত্যাদি বিষয়ে বিবেচনা করে বিভিন্ন ডিজাইনে গ্রামীণ চেকের কাপড় বোনা হয়। এই কাপড়ের বুনন খুবই সাদাসিধে বুনন। টানা সুতায় হালকা রং প্রয়োগ করা হয়। বুননের সময় প্রতি ইঞ্চিতে থাকে মোট ৭২টি সুতা। এভাবেই টানা ও পড়েন সুতার তালে তালে তৈরি হয় দেশীয় ঐতিহ্যের কাপড়। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সহপরিচালক ও লেডি হিলারি ক্লিনটন স্বয়ং গ্রামীণ চেক কাপড় পরিধান করেছেন এবং প্রশংসা করেছেন। গ্রামীণ চেক শুধু দেশীয় পোশাকের চাহিদাই পুরন করছে না বরং বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশ কে তুলে ধরছে।
Writer: Maria Islam Home Economics College Campus Ambassador, Bunon