UK এর Office for National Statistics (ONS) থেকে জানা যায় যে, ২০১৯ সালে যখন জার্মানি থেকে UK এর আমদানি কমে গেলো ঠিক তখন ই ২০২০ সালের এপ্রিল- জুন মাসে শুধুমাত্র চায়না থেকে করা আমদানি অন্যান্য সকল ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে।
ONS রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে শুধুমাত্র জানুয়ারী-মার্চ ২০১৮ এর তুলনায় ২০২১ সালের জানুয়ারী-মার্চ মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নভিত্তিক দেশগুলির সাথে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন পণ্য সামগ্রীর বাণিজ্য ২৩.১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে এবং নন-ই.ই.ইউ.ভুক্ত দেশগুলির সাথে ০.৮ শতাংশ। এ সময়ের মধ্যে যুক্তরাজ্যের শীর্ষ পাঁচটি আমদানিকারক দেশগুলোর মধ্যে (জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, নেদারল্যান্ডস এবং ফ্রান্স) একমাত্র চীন থেকে আমদানি বেড়েছে।

ONS এর তথ্য অনুযায়ী ১৯৯৭ সাল থেকে ২০২০ পর্যন্ত চীন থেকে আমদানি ক্রমাগত বেড়েই চলছে যদিও তা ২০২০ সালের এপ্রিল-জুন মাসে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে ।এদিকে BBC থেকে জানা যায়, যুক্তরাজ্যে রপ্তানি শুরু হওয়ার পর থেকে প্রথমবারের মতো চীন যুক্তরাজ্যের বৃহত্তম একক আমদানিকারক বাজারে জার্মানিকে ছাড়িয়ে গেছে ।যদিও জার্মানি যুক্তরাজ্যের বৃহত্তম ই.ই.ইউ. বাণিজ্যের অংশীদার হিসাবে অবিরত ছিলো।
ONS এর রিপোর্ট বিশ্লেষন করে আরো জানা যায় যে ১৯৯৭ সাল থেকেই যুক্তরাজ্য, অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় জার্মানি থেকে বেশি আমদানি করেছিল, কিন্তু ২০২০ সালের অক্টোবর – ডিসেম্বর থেকে ২০২১ এর জানুয়ারি – মার্চ মাসের মধ্যে এর ব্যাতিক্রম ঘটে , যখন যুক্তরাজ্য,জার্মানির চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র বেশি পরিমাণ আমদানি করছিল।২০১৮ সাল হতে ২০২১ সালের জানুয়ারী-মার্চ এর মাঝমাঝি সময় পর্যন্ত চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের পরিমান ৬৬.৬৬ শতাংশ বেড়ে £১৬.৯ বিলিয়ন (প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলারে) পৌঁছেছে, যা একই সময়ে জার্মানি থেকে আমদানির এক চতুর্থাংশ কমে £ ১২.৫ বিলিয়ন হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস (ONS)।এই ধারাবাহিকতা বৃদ্ধি পায় ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস থেকে। ONS এর মতে , যুক্তরাজ্যের সাথে জার্মানির বাণিজ্য ১.৭ বিলিয়ন ডলার (৩০.৫ শতাংশ) হ্রাস পায়,যা ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারির মধ্যে সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক পতন হিসেবে বিশ্লেষকগণ চিহ্নিত করেছেন।

(ONS) এর সর্বশেষ রিপোর্টে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রত্যাহার এবং করোনাভাইরাস এর প্রভাব, রপ্তানী বাণিজ্যের উপর কী কী প্রভাব ফেলেছে তার উপর দৃষ্টিপাত করা হয়। এতে দেখা গিয়েছে যে, ফেইস মাস্ক এবং পিপিই এর আমদানী বৃদ্ধি পায় যার ফলে চায়না কাপড় আমদানী তে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মার্কিন যুক্তরাজ্যের “The impacts of EU exit and the corona virus on UK trade in goods” নামের একটি গবেষণা থেকে থেকে এ চিত্র ফুটে উঠে।সকল তথ্যের প্রেক্ষিতে বোঝা যায়, করোনা মহামারীতে চীনের রপ্তানিতে খুব একটা প্রভাব ফেলেনি। বরং মহামারীটি চীনা পণ্যের চাহিদা বহুগুণ বাড়িয়েছে। যা BBC তাদের একটি প্রতিবদনে সরাসরি তুলে ধরেছে।করোনা মহামারীর পরে চীন ই একমাত্র দেশ যার অর্থনীতি অন্যান্য দেশের তুলনায় ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
লিখেছেন-
ফারহানা ইয়াসমিন
ইন্টারন্যাশনাল এফেয়ার্স নিউজ রিপোর্টার
বুনন - Bunon